মাহবুব উল আলম হানিফ, যিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বর্তমানে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগে তদন্তাধীন। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার, তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলম, ছেলে ফাহিম আফসার আলম, ফারহান সাদিক আলম এবং মেয়ে তানিশা আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ আদেশটি ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত প্রদান করেছে।​

একসময় আওয়ামী লীগে যোগদান করার জন্য মাহবুব-উল আলম হানিফ দলের কুষ্টিয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান আনোয়ার আলীর পেছন পেছন ঘুরতেন। অর্থ সংকটে ছিলেন দিশাহারা। অর্থাভাবে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার নয়াপল্টনে অবস্থিত সিটি হার্টের অফিস ভাড়া পর্যন্ত দিতে পারতেন না। সেই হানিফ গত দেড় যুগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদকে পুঁজি করে সারাদেশে তার জাল বিস্তার করে তৈরি করেন অবৈধ উপায়ে টাকা কামানোর নেটওয়ার্ক। দলীয় পদ ছাড়াও শেখ পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তা এবং অঘোষিত ব্যবসায়িক পার্টনার হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি বাগিয়ে নেন বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার ও ব্যবসা-বাণিজ্যে। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে হানিফ হয়ে ওঠেন দল ও সরকারের অন্যতম ক্ষমতাকেন্দ্র। সেই সুবাদে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজ রাজধানী ঢাকা ও জেলা কুষ্টিয়া ছাড়াও আরও অন্তত ৪টি জেলায় এবং দেশের বাইরে কানাডাসহ কয়েকটি দেশে তার সম্পদ ও ব্যবসা আছে।

চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাণিজ্য: পদ্মা ও গড়াই নদীর বালুমহল থেকে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাণিজ্য পরিচালনা।

নিয়োগ ও ইজারা বাণিজ্য: সরকারি নিয়োগ ও হাটবাজার ইজারা বাণিজ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ: উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন।

এছাড়া, তার স্ত্রীর নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অভিযোগও রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, অভিযুক্তরা বিদেশে পালিয়ে গেলে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।হাসিনার দেশত্যাগের পর তিনি অবৈধ পথে ভারতে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।