স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ ও অর্থপাচারের গুরুতর অভিযোগ!

​ধনঞ্জয় কুমার দাস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে আলোচিত ব্যক্তিত্ব। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন, নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ গ্রহণ এবং অর্থপাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।​

১. অবৈধ সম্পদ ও ব্যাংক লেনদেন

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, তিনি ২ কোটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৮২৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ৯০ লাখ ১৫ হাজার ৫৯০ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।​

২. নিয়োগ বাণিজ্য ও ঘুষ

ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এসব পদায়নের জন্য ৮০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করেছেন। ২০২২ সালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ডিআইজি মোল্ল্যা নজরুল ইসলামকে ৫ কোটি টাকা দিতে হয়েছে বলে জানা যায়।​

৩. অর্থপাচার ও বিদেশে সম্পদ

ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে অবৈধ আয়ের বিপুল অংশ পাচার করেছেন। ২০১2 থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে ফাস্ট সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে সেখানে সেকেন্ড হোম তৈরি করেছেন এবং কানাডায় বাড়ি কিনেছেন।

৪. সম্প্রদায়ভিত্তিক নিয়োগ ও প্রভাব

ধনঞ্জয় কুমার দাস পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকদের অগ্রাধিকার দিতেন। ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।​

৫. বরখাস্ত ও ওএসডি

২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, ধনঞ্জয় কুমার দাসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে, ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর তাকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।​

ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে। দুদক এসব বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Search