সম্পদের মতো দুর্নীতি-অনিয়মেও পাহাড় গড়েছেন সাবেক এমপি এনামুল

সম্পদের মতোই অনিয়ম-দুর্নীতির পাহাড় গড়েছেন রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক এমপি ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হক। নারী কেলেঙ্কারি, বিঘার পর বিঘা জমি দখল, অন্যের দোকান ভেঙে মার্কেট নির্মাণ, নিয়োগ বাণিজ্য এবং দলীয় পদ বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।

রাজশাহী-৪ আসন থেকে তিনবারের সংসদ সদস্য এনামুল হক কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন নিয়োগ বাণিজ্য করে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে জড়িয়ে দিয়েছেন মামলায়। সংসদ সদস্য হয়ে অনিয়ম করে পেয়েছেন কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন।এনামুল হক অন্যের জমি দখল করেছেন। তাঁর জামির পরিমান শত বিঘার বেশি। একজন ভুক্তভোগী বলেন, তাঁর কাছ থেকে তিন বিঘা জমি নিয়েছেন এনামুল। এ জন্য কোনো টাকা দেননি তিনি। করেছেন জবরদখল। এমন অভিযোগ করেন আরও কয়েকজন। 

গত ১৫ বছরে ক্ষমতার প্রভাব ও নিজের সন্ত্রাসী বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। নামে-বেনামে ৫ হাজার কোটি টাকার মালিক সাবেক এমপি এনামুল। নিজের মালিকানায় ‘নর্দান পাওয়ার সল্যুউশন লিমিটেড’নামের ৫০ মেগাওয়াটের কুইকরেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করেছেন। ঢাকার পান্থপথে এমএ টাওয়ার নামে একটি এবং আদাবরে একটি বহুতল ভবন, রাজশাহী শহরে আবাসিক বহুতল ভবন, সাহেববাজারে সিটি সেন্টার নামে আরেকটি বাণিজ্যিক বহুতল মার্কেট সাবেক এই এমপির। শহরে সাকোয়াটেক্স নামে গার্মেন্ট, নির্বাচনী এলাকা বাগমারায় ডুপ্লেক্স ভবন, ভবানীগঞ্জে বহুতল ভবনে ‘ভবানীগঞ্জ নিউ মার্কেট’ এবং সালেহা কোল্ড স্টোরেজ করেছেন। এনা প্রপার্টিজ নামে তার সারাদেশে ডেভেলপার ব্যবসাও রয়েছে। ছয় কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিলাসবহুল ছয়টি গাড়ি রয়েছে। তিনটি ঢাকায় ও তিনটি রাজশাহীতে ব্যবহার করেন। নানান প্রক্রিয়ায় ব্যাংকে গচ্ছিত আছে সাড়ে চৌদ্দ কোটি টাকা।

নিয়োগ বাণিজ্য, বিএনপি-জামায়াতিদের পুনর্বাসন ও জঙ্গিদের দলে ঠাঁই দেওয়া নিয়েও একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন সংসদ সদস্য এনামুল। বাগমারা উপজেলায় ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরি কাম প্রহরী’ পদে ৫০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে এনামুল হক চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। সে হিসাবে অন্তত দুই কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি। নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা টাকা দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন।নিজের ক্ষমতার ব্যবহার করে ব্যাংক থেকে স্ত্রীর নামে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেননি।

রাজশাহী-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক সম্প্রতি ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন।

Search