মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ছিলেন সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লে. কর্নেল মুহাম্মদ ফারুক খান। এমনই অভিযোগ তার এলাকাবাসীর। এছাড়া নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন পদবাণিজ্যসহ নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ছাড়তে হয় চাকরি। এরপর ১৯৯৬ নির্বাচনে কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন কিনে হয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতা। রাজাকার থেকে দিনে দিনে হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের কান্ডারি।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের খুব কাছের সদস্য। তিনি সামিট গ্রুপের মালিক আজিজ খানের ভাই। যে আজিজ খান দেশ থেকে কুইক রেন্টালের নামে প্রায় ১০০ লাখ কোটি টাকা পাচার করে সিঙ্গাপুরের মতো দেশের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি নির্বাচিত হয়েছেন। আজিজ খানের এত সীমাহীন দুর্নীতির পেছনের কারিগর হলেন এ আসামি ফারুক খান।ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভাই রাজনৈতিক প্রভাবের জোরে চট্টগ্রামে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের ১২ একর জমি দখল করে নিয়েছে আজিজ খানের সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড। আওয়ামী শাসনামলে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে জনগণের টাকা লুটপাট করে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আজিজ খান হয়েছেন সিঙ্গাপুরের অন্যতম শীর্ষ ধনী।দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সরকারি নগরীর পতেঙ্গা থানার নাজির পাড়ায় অবস্থিত এই জায়গা অবৈধ দখলে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। দখল ছেড়ে দিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা নোটিশ দিলেও আজিজ খান-ফারুক খান ভ্রাতৃদ্বয়ের প্রভাব ও দাপটের কারণে তা উদ্ধার হয়নি। এমনকি উচ্ছেদে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তকে প্রথম থেকেই প্রভাবিত করবার চেস্টা করে আসছেন। বিভিন্নভাবে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো এবং তদন্তকে অন্য দিকে মোড় ঘুরানোর জন্য বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তদন্তের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন তদন্তে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরবর্তীতে তদন্তকারী সংস্থাসমূহ জঙ্গী সংশ্লিস্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোষন করেন। ফারুক খান দীর্ঘদিন নীরব ছিলেন। গতকাল তিনি বলেছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং ইন্ধনের বিষয়টি তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।তিনি বিডিআর-এর নির্মম ঘটনার রাজনৈতিক মদদদাতা!! অথবা সেনা হত্যাকান্ডের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত!!
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এর পর থেকে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আত্মগোপনে গেছেন। তাঁদের কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন, আবার অনেক নেতা দেশ ছেড়েছেন বলে খবর এসেছে। এর মধ্যে ফারুক খানকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল পুলিশ।