পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক নানান অপরাধ-অপকর্ম, গুম-খুন-নির্যাতন, দমন-পীড়ন, দুর্নীতির দানব

বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে জয়ী হন আনিসুল হক। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশে তার রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে।  সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। 

আনিসুল হকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক দখলে রেখে এবং ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৬৬৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার বান্ধবী তৌফিকা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জামিন-মামলা ও নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য চালাত। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সংক্রান্ত। আনিসুল হকের ওই বান্ধবীর নাম তৌফিকা করিম। এ জুটি ১০ বছরে অবৈধভাবে ২০০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তৌফিকার সিন্ডিকেট আইন মন্ত্রণালয়ের সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করত। প্রতি জেলার চিফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা জজ নিয়োগে শত কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে এ সিন্ডিকেট। অবৈধভাবে অর্জিত টাকা পাচার হয়েছে কানাডাসহ আরো অনেক দেশে।

আনিসুল হক আইনমন্ত্রী থাকার সময় ২০১৮ সালে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয়, যা পরে রহিত করা হয়। ২০২৩ সালে করা হয় নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন। এ আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। আনিসুল হকের আমলে মাঠের বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক মামলায় তড়িঘড়ি করে বিচার শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পদে এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পদে দায়িত্বরত থাকাবস্থায় গ্রেপ্তারকৃতরা ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে নির্দেশদাতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আনিসুল হক। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গ্রেপ্তার হয়েছেন। নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

Search