দুর্নীতির বিশাল সম্রাজ্য গড়েছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদের তিনবারের মন্ত্রী ও একবার সংসদ-সদস্য ডা. দীপু মনি গ্রেফতারের পর ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুস-দুর্নীতির নানা তথ্য বের হতে শুরু করেছে। বিগত সরকারের প্রথম মেয়াদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তৃতীয় মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং চতুর্থ মেয়াদে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। এসব পদ-পদবি পেয়ে গত প্রায় ১৬ বছর তিনি বেশ বেপরোয়া ছিলেন। তার হাত থেকে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও রেহাই পাননি।

দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্ষমতার অপব্যবহার – পররাষ্ট্র, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ—তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন দীপু মনি। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সিন্ডিকেট গঠন ও নিয়ন্ত্রণ– ভাই টিপু ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী রতন কুমার মজুমদারকে দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সিন্ডিকেট গঠন। বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও বদলিতে ঘুষ লেনদেন চালু করেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে ২ কোটি টাকা, কলেজ অধ্যক্ষ পদে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। শিক্ষা খাতে দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্য – স্কুল-কলেজ ভবন নির্মাণে ৫% কমিশন বাধ্যতামূলক। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ ছিল টিপুর হাতে। চাঁদপুরে বালু উত্তোলন ও জমি দখল– নদী থেকে অবৈধ বালু তোলায় সহায়তা করেন চোরা সেলিমকে, যার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা লুটপাট। নদী থেকে অবৈধ বালু তোলায় সহায়তা করেন চোরা সেলিমকে, যার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা লুটপাট।

নোট-গাইড বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও সারা দেশে দেদার বিক্রি হচ্ছে এসব বই। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থী নোট বা গাইডের ওপর নির্ভরশীল। মুখে নোট-গাইডের বিরোধিতা করলেও দীপু মনি নোট-গাইড বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।ঢাকার এক নোট-গাইড প্রকাশক জানান, ৩ মাস পরপর অন্তত ২৫ কোটি টাকা কমিশন নিতেন দীপু মনি।

ডা. দীপু মনি ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো গুরুতর এবং বহুমাত্রিক—যার মধ্যে রয়েছে নিয়োগ-বাণিজ্য, জমি দখল, বালু ব্যবসা, এবং শিক্ষা খাতকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার। দুর্নীতি দমন কমিশন ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। জনমতের চাপে ও দলীয় ক্ষোভের কারণে এ বিষয়ে আরও তদন্ত ও বিচার দাবি উঠেছে।

Search