ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার কোটি টাকা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এক সময়ের দুর্দান্ত প্রতাপশালী আওয়ামী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের কসাই-আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বস্তায় করে ঘুষ নিতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ দিতেন তিনি বস্তা ভর্তি টাকা ঘুষ নিয়ে।আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তায় ভরে টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এ টাকা আদায় করা হতো। এজন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি৷ টাকা আদায় বা উত্তোলনে মূল ভূমিকা পালন করতেন ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাস। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এ কামাল-হারুন সিন্ডিকেট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিন্ডিকেটের অন্য সদস্য ছিলেন যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল ফজল মীর ওরফে বাদল, যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হোসেন ও উপসচিব মাহবুবুর রহমান শেখের বিরুদ্ধে একই সিন্ডিকেট থেকে দুর্নীতি, অনিয়মের অংশীদার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ‘বাংলাদেশের কসাই’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ছোট ছোট বাচ্চা, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক, রিকশাওয়ালাকে নির্দয়ভাবে খুন করা হয়েছে, তার অন্যতম কসাই ছিলেন তিনি। কামাল বাংলাদেশের কসাই (বুচার অব বাংলাদেশ)। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় প্রতি সন্ধ্যায় ‘কোর কমিটি’ বৈঠকে বসত। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দাসংস্থার সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকতেন। সেখানেই মূলত আন্দোলন দমনের নীল নকশা তৈরি হতো। এদিকে একপর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেছিলেন, ভারী অস্ত্রের ব্যবহার হলে সাধারণ আন্দোলনকারীরা ভয়ে ঘরে ফিরে যাবেন। কিন্তু তার সেই চেষ্টাও পরে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান ও মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিসাব স্থগিত থাকবে।

গত ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আসাদুজ্জামান খান কামাল রয়েছেন লোকচক্ষুর আড়ালে।সাক্ষী। একজন কট্টর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোর বিরোধী।

Search