কে এম নুরুল হুদা ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম, সহিংসতা ও বিতর্কের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচিত হন।
🗳️ নির্বাচনী অনিয়ম ও সহিংসতা: ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন: এই নির্বাচনে বিরোধী দলের অভিযোগ ছিল যে, ভোটারদের অংশগ্রহণ কম ছিল এবং ভোটের ফলাফল নিয়ে সন্দেহ ছিল। সিইসি নুরুল হুদা নির্বাচনের ফলাফলকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন, তবে বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন: ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা ও অনিয়মের ঘটনা ঘটে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড তৈরি হয় এবং সহিংসতায় অনেক প্রাণহানি ঘটে।
💰 আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
- বিশেষ বক্তার সম্মানী: একাদশ সংসদ নির্বাচন ও ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণে ১৫ জন বিশেষ বক্তার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল না বলে দাবি করেন সিইসি। তিনি বলেন, “অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
- নিয়োগ প্রক্রিয়া: ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ছিলো নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত,” এবং অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
🛡️ সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে মন্তব্য
সিইসি নুরুল হুদা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনকে অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনে সেনাবাহিনী কোনো কাজে আসে না,” এবং “এখন তো আমাদের সেই পরিস্থিতি নেই যে, বাক্স আছে লোকজন ব্যালটে ভোট দেবে।”
⚖️ সমালোচনা ও বিতর্ক
নুরুল হুদার আমলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট নাগরিকরা তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, দুর্নীতি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি অনাস্থার অভিযোগ তোলেন। তবে সিইসি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “নির্বাচন কমিশন কোনো আর্থিক লেনদেনে সম্পৃক্ত থাকে না,” এবং “গুরুতর অনিয়ম ও অসদাচরণের কোনো বিষয় প্রচার হয়নি।”
সার্বিকভাবে, কে এম নুরুল হুদার আমলকে বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে একটি বিতর্কিত অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।