অনিয়ম আর দুর্নীতির বরপুত্র বেনজীর আহমদ ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত ও বিশ্বস্ত।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বেনজীর আহমদ ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের তিনবারের এমপি ছিলেন। আর তিনবার এমপি হওয়ার সুবাদে যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান তিনি। জড়িয়ে পড়েন অনিয়ম-দুর্নীতির বেড়াজালে। আপন ছোট ভাই, ভগ্নিপতি, এমনকি গ্রাম-পুলিশের মাধ্যমেও তিনি টাকা হাতিয়ে নিতেন। ধামরাইয়ের প্রতিটি কল-কারখানা, কাবিটা, কাবিখা প্রকল্প ছিল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার রাস্তা। তবে সবচেয়ে বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বায়রা নামক রিক্রুটিং এজেন্সির সভাপতি হয়ে। এভাবে বেনজীর আহমদের বার্ষিক আয় গত পাঁচ বছরে বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ।তার একমাত্র মেয়ের জামাতা ধামরাই পৌরসভায় ‘আমিন মডেল টাউন’ নামে একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলেন। ওই প্রকল্পে অনেকের জমি নামমাত্র মূল্য দিয়ে লিখে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। 

বেনজীর আহমদ এলাকার প্রত্যেকটি কল-কারখানা থেকে আপনজনের মাধ্যমে মাসিক মাসোয়ারা নিতেন। এ ছাড়া এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্যও করেছেন।

বেনজীর আহমদ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি’র (বায়রা) সভাপতি হয়েছিলেন। জনশক্তি রপ্তানি বাজার নিয়ন্ত্রণ ও কুক্ষিগত করে রাখতে সাবেক চার সংসদ সদস্য নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেন নিজাম উদ্দিন হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, বেনজীর আহমদ ও আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তারা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে দেড় বছরে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন।বেনজীর আহমদের প্রতিষ্ঠান আহমদ ইন্টারন্যাশনাল মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর দিক থেকে পঞ্চম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকারনির্ধারিত খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু একজন কর্মী খরচ করেছেন ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এভাবে বেনজীর আহমদের বার্ষিক আয় গত পাঁচ বছরে বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। 

ঢাকা-২০ আসনের (ধামরাই) সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের বাৎসরিক আয় গত ৫ বছরে বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। সেইসঙ্গে তার জমির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণ। এছাড়া, ফ্ল্যাট, দোকান, গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে তার। শুধু তিনিই নন, আয় বেড়েছে তার স্ত্রী-সন্তানেরও। 

Search